আমাদেরবাংলাদেশ ডেস্ক: আজ ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস। আজ থেকে ৪৮ বছর আগে ১৯৭২ সালের এ দিনে রক্তপ্লাবিত সদ্যস্বাধীন আমাদের এ দেশে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন তথা ‘সংবিধান’ প্রণয়ন করা হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় রাজনৈতিক অভিলাষে, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আজ সেই সংবিধানের শরীরে অজস্র কাটাছেঁড়ার দাগ। মাঝে সামরিক শাসনের জাঁতাকলে এ সংবিধান রহিতও করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর তৎকালীন গণপরিষদে (বর্তমানের জাতীয় সংসদ) সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল।
স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র ১০ মাসের মাথায় সংবিধান প্রণয়ন ও অনুমোদন বিশ্বের ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস থেকে এ সংবিধান কার্যকর হয়। সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়।সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন।
মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে। বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে